যশোর সিটি প্রতিনিধি, কালের খবর :
লাইসেন্স জালিয়াতি করে অপচিকিৎসার অভিযোগে ২০২১ সালের ২২ মার্চ যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার প্রথমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করে দেন তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন। এরআগে ১১ জানুয়ারি এক নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় একই উপজেলার খাজা বাবা ক্লিনিক সরেজমিন পরিদর্শন করে স্বাস্থ্য বিভাগ নানা অনিয়মের কারণে খাজাবাবা ক্লিনিক বন্ধ করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মনীতি উপেক্ষা ও ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে রোগীর অস্ত্রোপচারের অভিযোগে ২৮ জুলাই স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের ঝটিকা অভিযানে সিলগালা ঘোষণা করে ঝিকরগাছা উপজেলার শাপলা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু কার্যক্রম থেমে নেই। অভিযোগ উঠেছে, প্রথমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, খাজা বাবা ক্লিনিক ও শাপলা ক্লিনিকের মতো বিগত দিনে বন্ধ ঘোষনা করা ৫৬ টি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অধিকাংশই চালু করা হয়েছে। সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনের অন্যত্র বদলি হওয়ার সাথেই মালিক পক্ষ সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, বর্তমান কর্তৃপক্ষের সঠিকভাবে তদারকি ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা না থাকা এবং মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে তারা সিলগালা করা ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক পরিচালনার সাহস দেখাচ্ছেন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, লাইসেন্স জালিয়াতি, নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসব সেবিকা না থাকা, নিম্নমানের অস্ত্রোপচার কক্ষ, প্যাথলজি বিভাগ নোংরা পরিবেশ ছাড়াও পরীক্ষার নামে মানুষকে জিম্মি করে অর্থ আদায়, অনুমোদনের চেয়ে অতিরিক্ত বেড ব্যবহার ও অপচিকিৎসা এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ লাইসেন্সের কারণে বিগত দিনে সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনের নেতৃত্বে জেলার ৫৫ টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা হয়। এরমধ্যে অনলাইনে আবেদন করা অনেক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ লাইসেন্স না দেয়ার সুপারিশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরে প্রতিবেদনও পাঠানো হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন পদোন্নতি নিয়ে ১০ জানুয়ারি খুলনার আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে পরিচালক পদে যোগদান করার সুযোগে বন্ধ ঘোষণা করা অন্তত ৫০ টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতি ছাড়াই চালু করা হয়েছে। এরমধ্যে যশোর শহরের নিউ মাতৃসেবা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাসনা আকবর মেমোরিয়াল, আইডিয়াল প্যাথলজি সেন্টার, নিরাময় ক্লিনিক, এএফসি, হেলথ ফোরটিস। শার্শা উপজেলার রজনী ক্লিনিক, পল্লী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জোহরা ক্লিনিক , ল্যাবজোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মা-মনি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মুক্তি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, উপলক্ষ ক্লিনিক, আলমদিনা প্রাইভেট হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ঝিকরগাছার বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সায়রা সার্জিক্যাল, আনিকা ক্লিনিক, ফেমাস মেডিকেল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ছুটিপুর প্রাইভেট ক্লিনিক, এস এস ক্লিনিক, আয়শা ক্লিনিক, শাপলা ক্লিনিক, সালেহা ক্লিনিক , সীমান্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার। চৌগাছা উপজেলার মায়ের দোয়া পাইভেট ক্লিনিক।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, তিনি যোগদান করার পর মাতৃসেবা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের জন্য লিখিতভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। বিগত দিনে বন্ধ ঘোষণা করা একটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কার্যক্রম চালু করার জন্য অনুমতি দেননি।